মাহমুদ উল খান আপেল
ফ্যাসিস্ট রেজিমের একজন অন্যতম উপদেষ্টা এবং মুল বেনিফিসিযারি’র একটা পোস্ট ঘুরতেছে যেখানে সে বলছে এই ক দিনের হরতাল অবরোধো কত টাকার ক্ষতি হইছে, সেই পরিসংখ্যান নিয়ে! সেই স্টেটাস সত্যিই তার কিনা জানিনা তবে, এই স্টেটাসটা যেই লেখুক তাকে ধন্যবাদ! কারন এই সংখ্যাটা এই মূহুর্তে জাতীর সামনে তুলে ধরাটা তাদের জন্য ব্যাকফায়ার করবে! হরতাল অবরোধে দেশের কোন ক্ষতি হচ্ছেনা বরং একটা ফ্যাসিস্ট রেজিমের লুটপাটে ঘাটতি দেখা দিয়েছে! বর্তমানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি একটা রাষ্ট্রের স্ট্রাকচারে এই রেজিমের লুটপাটের টুল হিসেবে ব্যাবহৃত হচ্ছে! জনগন সেটা জানে, সেজন্য তারা যখন জানবে যে তাদের কোন একশনে সরকার বলছে রাষ্ট্রের ক্ষতি হচ্ছে, সেটা তারা আরও বেশী করে করবে! সেকারনেই কোন পিকেটিং ছাড়াই হরতাল-অবরোধ নজিরবিহীনভাবে সফল হচ্ছে! এটা এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগনের নিরব প্রতিবাদ!
একটা বিষয় জানা খুব জরুরী, আঃলীগ খুব সফলভাবে জনগনের সামনে আন্দোলনের একটা ফরমেট দাঁড় করাইছে, সেটা হলো, হরতাল, অবরোধ, প্রতিবাদ মানেই হলো লগি-বৈঠার তান্ডব, গাড়িতে জ্বলন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা, যতভাবে পারা যায় সাধারন জনগনের জানমালের ক্ষতি করা! সেই ফরমেটে আন্দোলন না হলেই তারা এবং তাদের মনোনিত সুশিলরা বলা শুরু করে যে এসব কোন আন্দোলনই না! এভাবে সরকারের উপর চাপ তৈরী করা যায়না! তাদের ফরমেট মত, সব আন্দোলন তাদের মত করেই হতে হবে, নাহলে সেটা কোন আন্দোলনই না, এবং সেই ফরমেটে প্রতি পাঁচ বছর পর পর লগি-বৈঠার তান্ডব করে সরকারকে ফেলে দিতে হবে, তারপর একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করে তারপর সরকার বদল হবে! খেয়াল করে দেখেন তারা বিরোধীদলে থাকছে আর সরকার পরিবর্তনের সময় ঐরকম অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী হয়নি, এমন কি হইছে? তাহলে আসল কালপ্রিট কে বলেন!
বর্তমানে চলা হরতাল-অবরোধের স্বার্থকতা কি জানেন!
প্রথমত, এই সরকারের দূঃশাসনে অতিস্ট জনগনের নিরবে প্রতিবাদের একটা সুযোগ পেয়েছে!
দ্বিতীয়ত, ফুলেফেপে হলেও বর্তমান অর্থনীতির আকার আগের যেকোন সময়ের চেয়ে অনেকগুন বড়! সেকারনে হরতাল অবরোধে ক্ষতি হয় বহুগুন বেশী! এমনিতেই সরকারের অপশাসনে দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভয়াবহ খারাপ! বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ এক বছরে নেমে অর্ধেকের নিচে চলে আসছে! এই অবস্থা চলতে থাকলে আর কিছুদিন পর জনগনের প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র আমদানীর জন্য কোন ডলারই থাকবেনা! তার উপর যদি এই অবরোধ চলতে থাকে তাহলে অর্থনীতি আরও আগেই কলাপ্স করবে! সরকার তখন শত চেস্টা করেও পরিস্থিতি ধরে রাখতে পারবেনা! সেকারনে এই চলমান অবরোধ চালিয়ে যেতে হবে এবং এর মাধ্যমেই অচিরেই পরিস্থিতি সরকারের নিয়নন্ত্রের বাহিরে চলে যাবে! তখন বিদেশী শক্তিরও দরকার হবেনা! জনগনের এই নিবর প্রতিবাদেই এই রেজিমের পতন নিশ্চিত হবে!
মনে রাখবেন, সভ্য সমাজে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ এভাবেই হয়! ফ্যাসিস্ট রেজিমের দলকানা হলুদ মিডিয়ার প্রপাগান্ডা শুনে বিভ্রান্তি হবেননা! আপনারা সঠিক পথেই আছে এবং নিয়মতান্ত্রিক এই আন্দোলনের চমৎকার একটা ভবিষ্যৎ আছে! অচিরেই আপনারা তা দেখতে পাবেন!
Mahmudul Khan Apel
Political Analyst